পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক প্রকল্পগুলির সূচনা করেছেন তার মধ্যে অন্যতম এবং জনপ্রিয় প্রকল্প হলো লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্প চালু করার পর থেকে রাজ্যের মহিলারা মাসিক আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন সারা জীবন তারা এই সহায়তা পেয়ে যাবেন। এই টাকা পাওয়ার ফলে রাজ্যের বহু পরিবার স্বস্তি পেয়েছে। তবে পুজোর মুখে এই প্রকল্পকে ঘিরে উঠে এসেছে নতুন কিছু তথ্য, যা না জানলে আপনার ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আপনার ভাতা যদি বন্ধ করতে না চান এবং নিয়মিত পেতে চান তাহলে অবশ্যই এই আপডেটটি জেনে কি কি নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে সেগুলো তাড়াতাড়ি করিয়ে নিন।

Lakshmi Bhandar new Rules
Lakshmi Bhandar new Rules

কারা এই ভাতা পান?

২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলারা এই প্রকল্পের আওতায় থাকেন। যখন এই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল তখন জেনারেল মহিলাদের দেওয়া হতো ৫০০ টাকা করে এবং তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতি মহিলাদের দেওয়া হতো ১০০০ টাকা করে পরবর্তীকালে ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হয় এবং সাধারণ জাতির মহিলারা মাসে পান ₹১০০০ টাকা। তপশিলি জাতিভুক্ত মহিলারা পান ₹১২০০ টাকা

সাম্প্রতিক সময়ে জল্পনা চলছিল যে ভাতা বাড়ানো হতে পারে। তবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভাতা সারাজীবন চললেও ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আপনার ভাতা ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে যেগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে এবং এখনই আপনাকে এই কাজটি করিয়ে নিতে হবে না হলে আপনার ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

নতুন আবেদনকারীদের জন্য খবর

মুখ্যমন্ত্রী এক সভায় জানিয়েছেন, ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে নতুন আবেদনকারীরা ভাতা পেতে শুরু করবেন। অর্থাৎ যারা সম্প্রতি আবেদন করেছেন, তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে শুরু করবে ডিসেম্বর থেকে। অর্থাৎ যারা পুরনো ভাতা পাচ্ছিলেন তারা সেই ভাবেই পেয়ে যাবেন কিন্তু যারা নতুন করে আবেদন করেছেন এবং উপযুক্ত হয়েছেন তাদের ভাতা পূজার পরে অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে নিয়মিত পেয়ে যাবেন। তবে এবার দেখে নেওয়া যাক কোন কোন ভুলে আপনার ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

কোন কোন ভুলে বন্ধ হতে পারে ভাতা?

সরকারি সূত্রে সরাসরি ঘোষণা না এলেও প্রশাসনিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে, কিছু ভুল করলে আপনার ভাতা আটকে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই অনেকের ভাতা আটকে গিয়েছে এবং নিয়মিত পাচ্ছে না তাদের জন্য এই কাজটি করতে হবে এবং যারা নিয়মিত পাচ্ছেন তারাও এই কাজটি করিয়ে রাখবেন না হলে পরবর্তীকালে ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেগুলি হলো—

  1. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক না থাকলে টাকা জমা হবে না, তাই আপনার ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে আধার লিংক না থাকলে তাড়াতাড়ি করিয়ে নিন।
  2. মোবাইল নম্বর রেজিস্টার না থাকলে অনেক সময় তথ্য যাচাই অসম্ভব হয়ে পড়ে, তাই টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় এবার আপনার মোবাইল নাম্বার যদি ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে লিঙ্ক না থাকে তাহলে এটিও করিয়ে নিন না হলে ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
  3. বয়সসীমা—২৫ বছরের কম অথবা ৬০ বছরের বেশি মহিলারা এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন না। যারা ৬০ বছরের বেশি বয়স তাদের জন্য অন্যান্য ভাতা যেমন বৃদ্ধ ভাতা বা অন্যান্য ভাতা চালু করা হয়েছে।
  4. সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট না থাকলে ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যৌথ অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার সম্ভাবনা নেই। তাই তাদের জয়েন্ট একাউন্ট হয়েছে, তারা সিঙ্গেল অ্যাকউন্ট বানিয়ে নিতে পারেন না হলে পরবর্তীকালে টাকা ঢোকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ইতিমধ্যেই শোনা যাচ্ছে না লক্ষী ভান্ডারে ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হবে তবে এ ব্যাপারে স্পষ্ট কোন তথ্য এখনও নবান্নের তরফ থেকে পাওয়া যায়নি। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা আশ্বস্ত করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী বলেন—
“২৫ বছর বয়স থেকে শুরু হয়ে সারাজীবন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চলবে। মা-বোনেরা নিশ্চিন্তে থাকুন। সারাজীবন পাবেন।” তিনি আরও জানান, দুয়ারে সরকারের ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত শেষ হবে।

আপনার যদি ভাতা বন্ধ হয়ে যায় বা আপনি যদি নিয়মিত ভাতা পেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই মোবাইল নাম্বার ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে লিংক করতে হবে এবং আধার লিঙ্ক করিয়ে নিতে হবে ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে। এছাড়াও যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি হয়ে গিয়েছে তারা লক্ষ্মী ভান্ডারের জন্য আবেদন করলে টাকা পাবেন না তাদের জন্য বৃদ্ধ ভাতা ও অন্যান্য ভাতা চালু করেছে রাজ্য সরকার।

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প ইতিমধ্যেই রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মহিলাকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলেছে। তবে নিয়মকানুন না মানলে ভাতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই সময় থাকতে সতর্ক হন, সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি আপডেট করুন এবং নিশ্চিত করুন আপনার অ্যাকাউন্টে যাতে ভাতা নিয়মিত আসে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি সারা জীবন এই লক্ষী ভান্ডারের টাকা পেয়ে যাবেন।