বর্তমান দিনে দেখতে গেলে মানুষের দৈনন্দিন এবং নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ আগেকার তুলনায় প্রচুর পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে। সেই তুলনায় মানুষের ইনকাম বাড়েনি। বর্তমান দিনে জীবন যাপন অনেকটা কঠিন হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে বাজারে চাল-ডাল, তেল, সবজি—সবকিছুর দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। জ্বালানির দামও লাগামছাড়া। এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণও বাড়ছে প্রতিবছর হু হু করে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য জুড়ে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলির জন্য মাস শেষে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে এবং এমতাবস্থায় বিদ্যুৎ বিল মেটানো এক বিরাট চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে এবং সাধারণ মানুষের কথার চিন্তাভাবনা করে তাই সরকার এবার একটি বিরাট বড় উদ্যোগ নিয়েছে যেখানে  সরকারের ঘোষণা করা Free Bijli Yojana অনেকটা আশার আলো জ্বালিয়েছে সাধারণ মানুষদের মধ্যে।

Free Bijli Yojana কী?

Free Bijli Yojana হল এমন একটি সরকারি প্রকল্প যেখানে প্রতি মাসে ১২৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। যেটা সাধারণ এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষদের জন্য অনেকটাই সুবিধাজনক। তবে কেউ যদি ১২৫ ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তাহলে সে এই সুবিধা পাবে না। এর মূল উদ্দেশ্য হল—

এই প্রকল্প চালু করার পিছনে মূল কারণ হলো বিদ্যুতের অপব্যবহার রদ করা এবং অর্থনৈতিকভাবে যারা দুর্বল রয়েছে তাদের বিদ্যুৎ বিল মকুব করা হলে অনেকটাই সাশ্রয় হবে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিল মকুব করা হলে অনেক দরিদ্র পরিবারগুলো কিন্তু চালাতে পারবে যার ফলে পরিবেশের দূষণ অনেকাংশে কমবে। তবে এখানে সব থেকে বড় কথা হলো এখানে আপনাকে আলাদা করে আবেদন করতে হবে না যাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ কানেকশন রয়েছে তারা সকলেই এই সুবিধা পেয়ে যাবেন। যদি কারো বাড়িতে বৈধ গৃহস্থলী বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে এবং প্রতি মাসে 125 ইউনিট ভাতার কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অটোমেটিক তার বিদ্যুৎ বিল শূন্য হয়ে যাবে।

প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য

বিষয়বিস্তারিত
প্রকল্পের নামFree Bijli Yojana
কারা কারা এই ছবিটা পাবেগ্রাম ও শহরের প্রত্যেকটি পরিবারে গৃহস্থলী বিদ্যুৎ কানেকশন থাকলে এই সুবিধা পাওয়া যাবে
ফ্রি ইউনিট সীমাপ্রতি মাসে ১২৫ ইউনিট পর্যন্ত ফ্রি পাওয়া যাবে
অতিরিক্ত ব্যবহারকেউ যদি ১২৫ মিনিটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তাহলে তাকে বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে
আবেদন পদ্ধতিআলাদা করে আবেদনের দরকার নেই, স্বয়ংক্রিয় অন্তর্ভুক্তি হয়ে যাবে
উপকারভোগীর সংখ্যা১.৮২ কোটি পরিবার
সম্ভাব্য শুরুর সময়কয়েক সপ্তাহের মধ্যে
লক্ষ্যদরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের আর্থিক স্বস্তি, বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পরিবেশ রক্ষা

কারা পাবেন এই সুবিধা?

এই সুবিধা সমস্ত ধরনের গৃহস্থলী বিদ্যুৎ গ্রাহক অর্থাৎ গ্রাম বা শহর সকলেই পেয়ে যাবেন। যাদের বৈধ-বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ কম অর্থাৎ 125 ইউনিটের কম মাসে ব্যবহার করেন তারা সকলেই এই সুবিধা পেয়ে যাবেন। তবে এখানে আপনাকে আবেদন করতে হবে না স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার মিটারের ১২৫ মিনিটের কম বিদ্যুৎ ব্যবহার হলে বিদ্যুৎ বিল মুকুব হয়ে যাবে।

কেন চালু হলো এই প্রকল্প?

বর্তমান দৈনন্দিন জীবনে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকারের তরফ থেকে মাসিক বাজেটে বিদ্যুৎ বিলের ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক উপকার হবে। এছাড়াও আরো একটি কারণ হলো এই ছাড় দেওয়ার ফলে অনেক পরিবারের বিদ্যুৎ অপব্যবহার কম হবে, এছাড়াও পরিবেশের দূষণ অনেকটা কমবে এবং সকলেই বিদ্যুৎ পরিষেবা পাবে বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারগুলো।

কখন থেকে কার্যকর হবে?

সরকার এখনও নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। বিদ্যুৎ দপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রকল্প চালু হতে পারে। প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি প্রায় শেষ, শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি। আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হলে সরকারের তরফ থেকে সকলকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

কিভাবে পাবেন সুবিধা?

আপনার বাড়িতে যদি বৈধ বিদ্যুৎ কানেকশন থেকে থাকে তাহলে আপনাকে আর কিছু করতে হবে না এবং যদি কারো বাড়িতে বিদ্যুৎ কানেকশন না থাকে তাহলে সে যদি গৃহস্থলি বিদ্যুৎ কানেকশন নিয়ে থাকে তাহলেও সে এই সুবিধা পেয়ে যাবেন। এখানে কোন আবেদন বা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না। অটোমেটিক আপনার মিটারে ১২৫ মিনিটের কম বিদ্যুৎ বিল আসলে আপনাকে টাকা দিতে হবে না।

[taboola_mid_article]

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কৌশল: ১২৫ ইউনিটে মাস কিভাবে চালাবেন?

আপনি যদি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার কমাতে চান এবং আপনার পরিবার যদি ছোট হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে আপনারা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবেন এবং কিভাবে মাসে 125 ইউনিটের কম বিদ্যুৎ বিল আসবে তার একটি তালিকা নিচে দেওয়া হল-

যন্ত্রপাতিদৈনিক সময়মাসিক ইউনিট
ফ্যান – ২টি১৬ ঘণ্টা36
LED লাইট – ৪টি৬ ঘণ্টা8
ফ্রিজ২৪ ঘণ্টা30
টিভি৪ ঘণ্টা12
মোবাইল চার্জ + Wi-Fi5
মোট91

Free Bijli Yojana 2025 কেবল বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার উদ্যোগ নয়, বরং এটি একটি সচেতনতা ও আচরণ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া। এই উদ্যোগটি নেওয়ার ফলে সকলেই বিদ্যুৎ পরিষেবা পাবে এবং পরিবেশ দূষণ অনেক অংশে কম হবে। এই পরিষেবা দেওয়ার পিছনে সরকারের লক্ষ্য হলো কেউ যাতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে এবং সকলেই যাতে বিদ্যুৎ পরিষেবা পায়।