কৃষকদের উন্নতির জন্য কেন্দ্র সরকার থেকে শুরু করে রাজ্য সরকার প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। এবার কৃষকদের জন্য চালু হয়েছে Digital Farmer ID Card (ডিজিটাল কৃষক পরিচয়পত্র)। এই কার্ডের মাধ্যমে কৃষকরা সরাসরি সরকারি ভর্তুকি, ঋণ, ফসল বিমা ও নানা কৃষি-সহায়ক স্কিমের সুবিধা নিতে পারবেন। আপনি যদি একজন কৃষক হয়ে থাকেন তাহলে এই কার্ড বানিয়ে নিলেই আপনার সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কৃষকদের জন্য যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় এবার থেকে এই কার্ডের মাধ্যমেই কৃষকদের দেওয়া হবে। যাদের কাছে এই কার্ড থাকবে তারা বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে যাবেন কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে।

আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ যদি এই কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত হন তাহলে আর দেরি না করে তাড়াতাড়ি এই কার্ড বানিয়ে নিন। ভবিষ্যতে কৃষকদের সমস্ত ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে এই কার্ডের মাধ্যমে। আর এই কার্ড না থাকলে আপনি বঞ্চিত হবেন বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার থেকে। আগামী দিনে কৃষকদের জন্য সরকারের প্রায় সব সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে এই Farmer ID Card বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে।
কী এই Farmer ID Card? কেন এটি জরুরি?
Farmer ID Card হলো একটি ডিজিটাল পরিচয়পত্র যেখানে একজন কৃষকের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। যেমন— এই কার্ডের মধ্যে থাকবে কৃষকের নাম, ঠিকানা ও আধার নম্বর, জমির মালিকানা ও খতিয়ান তথ্য, ফসল চাষের ধরন ও মৌসুমভিত্তিক তথ্য, কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণ। এর ফলে সরকারের কাছে সঠিক কৃষকদের তথ্য থাকবে এবং সরকার যেকোনো সময় চাইলে যে কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা এই কার্ডের মাধ্যমে সরাসরি কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে দিতে পারবে। এর ফলে যে কোন কাজকর্ম আপনারা বাড়িতে বসেই করে নিতে পারবেন এবং সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকি দিয়ে থাকে কৃষকদের জন্য এটিও এই কার্ডের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন কৃষকেরা।
Farmer ID Card-এর মাধ্যমে কৃষকরা যেসব সুবিধা পাবেন
- এই কার্ড থাকলে PM-KISAN-এর টাকা সরাসরি ব্যাংকে পৌঁছে যাবে। এর জন্য আর আপনাকে এখানে ওখানে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না।
- ফসল বিমা (Crop Insurance) ও কৃষি ঋণের সুবিধা সহজে পাওয়া যাবে। এছাড়াও সরকার যদি কৃষকদের জন্য কোন প্রকল্প বা কোন সুযোগ সবিধা নিয়ে আসে তাহলে সেটি সরাসরি কৃষকেরা পেয়ে যাবেন এই কার্ডের মাধ্যমে।
- সার, বীজ ও কৃষিযন্ত্রের ভর্তুকি দ্রুত হাতে আসবে। এর জন্য আর দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করে থাকতে হবে না।
- জমির তথ্য ডিজিটাল রেকর্ডে সংরক্ষিত থাকবে সরকারের কাছে তাই জমি সংক্রান্ত আর কোন সমস্যা পরবর্তীকালে ঘটবে না।
- কৃষকরা সরাসরি কৃষি অফিস বা অনলাইনে নিজেদের তথ্য যাচাই করতে পারবেন। কার কতটা জমি রয়েছে এবং জমির সমস্ত তথ্য যখন খুশি সরকারি অফিসে না গিয়ে বাড়িতে বসে বের করে নেওয়া যাবে।
কোন কোন রাজ্যে চালু হয়েছে?
২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় সব রাজ্যে এটি চালু হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজ্যগুলি হলো:
- উত্তরপ্রদেশ upfr.agristack.gov.in
- বিহার dbtagriculture.bihar.gov.in
- মধ্যপ্রদেশ চালু হবে
- রাজস্থান চালু হবে
- পশ্চিমবঙ্গ (শীঘ্রই চালু হচ্ছে)
অনলাইনে Farmer ID Card আবেদন পদ্ধতি
আপনি যদি এই কার্ড বানাতে চান তাহলে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন জানাতে হবে। এখানে আবেদন করতে হলে আপনাকে আপনার কৃষি দপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন জানাতে হবে। ধাপে ধাপে কিভাবে আবেদন করবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ধাপ ১: আপনার রাজ্যের কৃষি দপ্তরের সরকারি ওয়েবসাইটে যান।
ধাপ ২: “Farmer Registration” বা “কৃষক রেজিস্ট্রেশন” অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ ৩: নিচের তথ্য সঠিকভাবে দিন—আধার নাম্বার মোবাইল নাম্বার, জেলা ব্লক ও গ্রামের নাম, ব্যাংক একাউন্টের নাম্বার, জমির তথ্য সঠিকভাবে ও সঠিক স্থানে দিয়ে আবেদন পত্রটি পূরণ করতে হবে।
ধাপ ৪: প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করুন—
- আধার কার্ড (PDF)
- জমির দলিল / খতিয়ান
- ব্যাংক পাসবুক
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
ধাপ ৫: ফর্ম সাবমিট করুন এবং আবেদন নম্বর সংগ্রহ করুন।
Farmer ID Card ডাউনলোড করার নিয়ম
যারা যারা এই কার্ড বানানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন করবেন তারা রেজিস্ট্রেশন করা ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এই কার্ড সরাসরি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। আপনারা যেই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি অনলাইনে আবেদন করবেন সেই একই ওয়েবসাইটে গিয়ে “Download ID Card” অপশন সিলেক্ট করুন। ডাউনলোড করার জন্য আপনাকে আবেদন নম্বর / মোবাইল নম্বর দিয়ে লগইন করতে হবে এরপর OTP ভেরিফিকেশনের পর PDF আকারে কার্ড ডাউনলোড করুন। চাইলে প্রিন্ট বের করে ব্যবহার করতে পারবেন।
এছাড়াও আপনারা গুগল থেকে অ্যাপের মাধ্যমে এই কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। এজন্য আপনাদের প্লে স্টোর থেকে “Farmer Registry App” ডাউনলোড করে নিতে হবে।
এই কার্ডের গুরুত্ব
কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে এই কার্ড চালু করার পিছনে মূল উদ্দেশ্য হলো এই কার্ড ছাড়া আর সরকারি সুযোগ সুবিধা পাবেন না কৃষকেরা। কিন্তু সেটা যে সমস্ত সরকারি স্কিম কৃষকদের জন্য চালু করবেন সেই সমস্ত সুবিধা কৃষকেরা এই কার্ড থাকলেই পাবেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কেন্দ্র সরকারি ইস্কিন গুলো অবৈধভাবে যারা কৃষক নয় তারাও পেয়ে যাচ্ছেন তাই এবার থেকে এই কার্ড থাকলে আর অবৈধভাবে কেউ কেন্দ্র সরকারি স্কিম এবং কেন্দ্র সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে না। এই কার্ড থাকলে কৃষকরা সরাসরি সরকারের তরফ থেকে সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
বর্তমানে ভারতবর্ষের সমস্ত কিছু এমনকি কৃষি খাতকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আনা অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে প্রত্যেকটি নাগরিকের এবং প্রত্যেকটি কৃষকদের তথ্য সরকারের কাছে থাকবে। তাই আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ যদি কৃষিকাজ করেন, তাহলে আর দেরি না করে আজই আবেদন করুন Farmer ID Card-এর জন্য। কারণ আগামী দিনে কৃষি উন্নয়নের চাবিকাঠি হতে চলেছে – ডিজিটাল কৃষক পরিচয়।

My name is Sujit Roy, and I have been involved in content writing for the past four years. I provide various types of informative content for users.