আপনি যদি ভারতের একজন নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে আপনিও পেয়ে যেতে পারেন ₹২.৫ হাজার টাকা। ইতিমধ্যেই প্রত্যেকটি গ্রামে গ্রামে এবং ঘরে ঘরে প্রত্যেকেই এই প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা পেয়ে যাচ্ছে। ভারতের কোটি কোটি মানুষ এখনো ভাড়া বাড়ি, কাঁচা ঘর বা অস্থায়ী আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বিশেষ করে ভারতের জনসাধারণের সহায়তা করতে এবং তাদের স্থায়ী একটি বসবাসের জায়গা করে দিতে কেন্দ্র সরকারের এই উদ্যোগ। ইতিমধ্যেই প্রচুর মানুষজন এই প্রকল্পের সুবিধা উপভোগ করেছেন এবং যারা এখনো এই প্রকল্পের সুবিধা উপভোগ করেননি তারা সকলেই এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২.৫ লক্ষ টাকা পেয়ে যাবেন। মাথার উপর একটি নিরাপদ পাকা ছাদ শুধুমাত্র আরামের বিষয় নয়, বরং এটি জীবনের অন্যতম মৌলিক প্রয়োজন। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে কেন্দ্র সরকার নিয়ে এসেছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ২.০ (PMAY 2.0)।

এতদিন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মাধ্যমে এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা করে দেওয়া হতো কিন্তু নতুন সংস্করণে প্রকল্পের আওতায় সর্বোচ্চ ₹২.৫ লক্ষ টাকা সরাসরি অনুদান দেওয়া হবে। তাই যারা যারা এখনো টাকা পাননি তাদের জন্য এটি সুখবর হলো তারা আরও বেশি টাকা পেয়ে যাবেন। কথায় বলে সবুরে মেওয়া ফলে। অর্থাৎ যারা এতদিন ধৈর্য ধরে রয়েছেন এবং যাদের এই প্রকল্পের টাকা ঢুকেনি তারা ডবল টাকা পেয়ে যাবেন। সরকারের লক্ষ্য আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ১ কোটি নতুন পাকা বাড়ি নির্মাণ করা। এটি নিঃসন্দেহে গৃহহীন বা আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারের জন্য বড় স্বস্তি ও আশার আলো।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য
কেন্দ্র সরকার দেশের বেকারত্ব এবং দরিদ্রতা দূরীকরণের জন্য এবং যাদের মাথার ওপরে ছাদ নেই তাদের স্থায়ী একটি বসবাসের ঠিকানা করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিয়ে এসেছেন। এবার প্রধানমন্ত্রী আবার যোজনা দেশের প্রতিটি নাগরিকের মাথার উপর একটি নিরাপদ ছাদ নিশ্চিত করা। শহর ও গ্রামের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারকে স্থায়ী বাড়ির মালিকানা দেওয়া দেওয়া হবে ফলে সবাই একটি থাকার জায়গা পাবে। সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতি আনা। গৃহহীনতা কমিয়ে আনা এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। এর ফলে রাজ্য তথা দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবার গুলো ভীষণভাবে উপকৃত হবে।
কারা এই সুবিধা পাবেন?
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ২.০-তে আবেদন করার জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে—
- এখানে আবেদন জানাতে হলে আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে এবং ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী (গ্রাম অথবা শহর) হতে হবে
- নিজস্ব পাকা বাড়ি থাকা যাবে না।
- পূর্বে যদি এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে থাকেন তাহলে নতুন করে আর এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না। তবে যদি এর আগে এই প্রকল্পের সুবিধা না পেয়ে থাকেন তাহলে নতুন এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে যাবেন।
- ভূমিহীন পরিবার, ভগ্নপ্রায় বা মেরামতের প্রয়োজন এমন বাড়ির মালিক আবেদন করতে পারবেন।
- অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবার, BPL শ্রেণি, দিনমজুর ও অসংগঠিত খাতের শ্রমিক এই সুবিধার জন্য যোগ্য।
আর্থিক সহায়তা ও এর ব্যবহার
প্রকল্পের আওতায় যোগ্য পরিবারগুলির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সর্বোচ্চ ₹২.৫ লক্ষ টাকা অনুদান পাঠানো হবে। ইতিমধ্যে বহু পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধা উপভোগ করেছেন এবং বহু পরিবার এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একটি মোটা অংকের টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে পাঠানো হয় তাই সকলেই এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হন।
সুবিধার ধরণ | অনুদানের পরিমাণ (সর্বোচ্চ) | ব্যবহারযোগ্য ক্ষেত্র |
---|---|---|
নতুন পাকা বাড়ি নির্মাণ | ₹২.৫ লক্ষ | নতুন বাড়ি তৈরির জন্য |
পুরনো বাড়ি মেরামত | ₹২.৫ লক্ষ | সংস্কার ও মেরামত কাজের জন্য |
বাড়ি সম্প্রসারণ | ₹২.৫ লক্ষ | অতিরিক্ত কক্ষ বা জায়গা তৈরির জন্য |
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
এখানে আবেদন জানাতে হলে আবেদনকারীকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় নথিগুলো রেডি করে রাখতে হবে। আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত ডকুমেন্ট অবশ্যই প্রস্তুত রাখতে হবে—
- আবেদনকারী আধার কার্ড
- আবেদনকারীর রেশন কার্ড
- ইনকাম সার্টিফিকেট
- ব্যাংক একাউন্টের পাসবুক
- স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র
- ভোটার কার্ড ও রেশন কার্ড
- সক্রিয় মোবাইল নম্বর
নথিগুলি অবশ্যই পরিষ্কার, সঠিক ও আপডেট থাকতে হবে, নইলে আবেদন বাতিল হতে পারে। এছাড়াও মোবাইল নাম্বারের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করিয়ে রাখতে হবে এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মোবাইল নাম্বারের সঙ্গে লিং থাকতে।
আবেদন প্রক্রিয়া
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ২.০-এর আবেদন সম্পূর্ণ অনলাইনে করতে হবে। ধাপগুলো হলো—
- অনলাইনে আবেদন করার জন্য প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান pmayg.gov.in
- এরপর “Citizen Assessment” সেকশনে ক্লিক করুন।
- আধার নম্বর দিন এবং মোবাইল নাম্বার দিন এরপর মোবাইল নাম্বারে একটি OTP আসবে সেই OTP দিয়ে যাচাই করুন।
- অনলাইন ফর্ম পূরণ করুন। অনলাইনে আবেদনের সময় অবশ্যই আবেদনকারের প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য যেমন নাম, বয়স, স্থায়ী বাসিন্দার ঠিকানা ও অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সঠিকভাবে এবং নির্ভুলভাবে আপলোড করতে হবে এবং অবশেষে জমা করতে হবে।
- ফর্মের প্রিন্ট কপি ও প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে নিকটবর্তী CSC সেন্টারে জমা দিন।
- সেখান থেকে পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এছাড়াও যদি কেউ অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন জানাতে চান তাহলে আবেদনকারীকে অবশ্যই পঞ্চায়েত অফিসে অথবা ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসে গিয়ে এই আবেদন সম্পর্কে আগে খোঁজখবর নিয়ে তারপর অফলাইনের মাধ্যমে ফ্রম সংগ্রহ করে পরে প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য দিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করে জমা করতে হবে।
টাকা পাওয়ার সময়সীমা
আবেদন করার পর আপনি যদি উপযুক্ত হন তাহলে আপনার বাড়িতে সার্ভে করতে আসবে এবং সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে সিলেক্ট করা হবে।সব কিছু সঠিক থাকলে সর্বোচ্চ ₹২.৫ লক্ষ টাকা সরাসরি আবেদনকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা আসার পর আপনার কাজ শুরু করতে হবে এবং সরকারি দপ্তরের তরফ থেকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ২.০ শুধু একটি সরকারি প্রকল্প নয়, বরং এটি লক্ষ লক্ষ পরিবারের স্বপ্ন পূরণের সেতু। অনেক পরিবারের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন থাকে বাড়ি করার কিন্তু টাকার অভাবে করতে পারে না। ২০২৪ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে ১ কোটি পরিবারের হাতে নতুন বাড়ির চাবি তুলে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। তাই যাদের এখনো বাড়ি নেই তাদের চিন্তা করতে হবে না এবং সরকার দরিদ্র দূরীকরণের জন্য এবং সকলের বাড়ি নির্মাণের জন্য এই প্রকল্প নিয়ে এসেছেন।
যারা বহু বছর ধরে একটি পাকা ছাদের অপেক্ষায় ছিলেন, তাদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। সঠিক সময়ে আবেদন, নির্ভুল নথি জমা এবং শর্ত পূরণ করলে বাড়ি পাওয়া এখন আর স্বপ্ন নয়—বরং হাতের নাগালের বাস্তবতা।

My name is Bongo Sambad, and I have been involved in content writing for the past four years. I provide various types of informative content for users.